জবা গাছের চারা করার পদ্বতি
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
জবা গাছের চারা করার পদ্বতি
জবা গাছ মোটামুটি সবার বাগানেই আছে ।আজ আমি আলচনা করবো জবা গাছের চারা তৈরির করার পদ্বতি নিয়ে।যে পদ্বতি প্রয়োগ করে খুব সহজেই চারা তৈরি করতে পারবেন।যদিও প্রায়ই সবাই জানেন তবুও অনেকেই ভুল করেন সেই বিষয়ে আজ আলচনা করবো।
জবা গাছের চারা কি কি ভাবে তৈরি করা যায় ?
জবা গাছ অনেক রকম ভাবে চারা তৈরি করা যায়।সেগুলো হল
১.জবা গাছের বীজ থেকে চারা করা যায়।
২.গাছের ডাল কেটে চারা করা যায়।
৩.গুটি কলম বা জোরা কলম করে চারা করা যায়।
১.জবা গাছের বীজ থেকে চারা করা যায়।
জবা গাছ থেকে চারা করতে হলে প্রথমে বীজ বাজার থেকে কিনে আনতে হবে।আর নাহলে গাছেই বীজ তৈরি করতে হবে।(গাছে বীজ তৈরি করার বিষয়ে পরে বিস্তারিত আলচনা করবো )।বীজ সংগ্ৰহ করে বীজ গুলিকে কিছু সময় জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
বীজ থেকে চারা বের করতে কী মিডিয়া প্রয়োজন?
বীজ থেকে চারা বের করতে অনেক ধরনের মিডিয়া ব্যবহার করা যায় যেমন কোকোপিট , বালি, বালি ও কোকোপিট, ধানের চিটা, মাটি, মাটি বালি ও কোকোপিটের মিশ্রন ইত্যাদি।
তবে আপনি যেটাই ব্যবহার করুন না কেন পদ্ধতি একটাই ।
প্রথমে 4 inch টব নিয়ে টবের পাদদেশে যে ছিদ্র রয়েছে তাতে ছোট জালি বসিয়ে অল্প মাটি দেব ।এরপর টবেতে মাটি ও বালির মিশ্রন দিয়ে ভর্তি করবো।এবার মাটির উপরে বীজটি রেখে অল্প মাটি দিয়ে চাপা দিয়ে দেব এবং উপর থেকে জল ছিটিয়ে ভিজিয়ে দেব।তারপর টব টিকে ছায়াত নিয়েগিয়ে রাখবো।
বীজে জল দেবার নিয়মাবলী:
বীজ যদি আষাঢ় মাসে করেন তাহলে ৩ দিন অন্তর জল দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দেবেন।আর যদি গরম কালে করেন তাহলে প্রতিদিন অল্প অল্প জল দিয়ে মাটি ভেজা রাখতে হবে।
বিশেষ সতর্কতা :
বীজ থেকে চারা করতে গেলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় না হলে চারা তৈরি হয়না।
১.বীজ গুলো যখন জলে ভেজাবেন তখন দেখবেন কিছু বীজ জলের উপরে ভাসমান অবস্থায় রয়েছে।সেই বীজ গুলো কে বাতিল করতে হবে।শুধুমাত্র যে গুলো জলে ডুবে যাবে সেই বীজ গুলো কে নিতে হবে।
২.বীজ গুলোতে যেন ছত্রাক লেগে না থাকে।
৩.শীত কালে ও আষাঢ় মাসে মিডিয়াতে জল প্রতিদিন দেওয়া যাবেনা।মিডিয়া অল্প শুকিয়ে আসলে জল দিতে হবে।আর গরম কালে প্রায় প্রতিদিন জল দিতে হবে।মাটি যদি শুকিয়ে যায় তাহলে বীজ খারাপ হয়ে যাবে।
৪.যে মিডিয়া ব্যবহার করেন না কেন বীজ পতিস্থাপনের আগে মিডিয়াতে ছত্রাক নাশক ঔষধি ব্যবহার করতে হবে।
উপরিউক্ত সতর্কতা অবলম্বন করলে ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে বীজ থেকে চারায় রুপান্তরিত হবে।
জবা গাছের ডাল থেকে চারা করার পদ্বতি:
জবা গাছের ডাল থেকে চারা করা খুব সহজ।আপনি বছরের যেকোন সময় চারা করতে পারবেন।
প্রথমে যদি আপনি আষাঢ় মাসে চারা করেন তাহলে একটু মোটা ডাল নিতে হবে আর যদি গরম কালে চারা করেন তাহলে পেনসিলের ধরনের মোটা ডাল নিতে হবে।তারপর ডালে থেকে 5 inch মাপে ছোট ছোট টুকরা করে নিতে হবে।এবার টুকরো গুলিকে ছত্রাক নাশক জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে ১৫ মিনিট।এরপরে জল থেকে তুলে নিয়ে ডালটির যে অংশটি মাটির নিচে যাবে সেখানে ৪৫° কোনে কেটে রুট হরমোন লাগাতে হবে।এবার আপনাকে মিডিয়া তৈরী করতে হবে ।
তারপর 4 inch টবে মাটি দিতে হবে।এবার টবের মাটি ভাল করে ভিজিয়ে দিতে হবে।দেখতে হবে যাতে জল না দারায়। একটা কিছু দিয়ে মাটিতে ছিদ্র করে ডাল টাকে পুতে দিতে হবে এবং ছায়াতে রেখে দিতে হবে ।৭ দিন পর থেকে পাতা আসা শুরু হবে ।এক মাস পর যখন পাতা বড়ো হবে তখন রৌদ্রতে রাখতে হবে।
আপনি যদি গরম কালে করেন তাহলে ICU পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।আর যদি আষাঢ় মাসে করেন তাহলে ICU পদ্ধতির প্রয়োজন নেই।
ICU পদ্ধতিটি কী?
ICU পদ্ধতি হল এক বিশেষ পদ্ধতি যার মাধ্যমে চারা করার সময় ডাল বা বীজ কে বাইরের গরম আবহাওয়া থেকে রক্ষা করে।
ICU যখন আপনি ডাল বা বীজ কে টবে লাগাছেন তখন টবে জল দিয়ে মাটি ভেজাতে হয়।সেই সময় পলিথিন দিয়ে ডাল ও টবকে ডেকে দিয়ে দড়ি দিয়ে বেদে দিতে হয়।যাতে মাটি আদ্রতা বজায় থাকে এবং মাটি ও ডাল বা বীজ না শুকিয়ে যায়।
কিছু সতর্কতা:
ডাল থেকে চারা করতে এবং ICU পদ্ধতি ব্যবহার করতে গেলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
১.যে ডাল টি নির্বাচন করবেন সেটা যেন সুস্থ সবল হয়।
২.ডাল টাকে কেটে নিয়ে ছত্রাক নাশক জলে অবশ্যই রাখতে হবে।
৩.যে মাটি ব্যবহার করবেন তাতে ছত্রাক নাশক ঔষধ ব্যাবহার করতে হবে।
৪.ডাল মাটিতে বসানো হয়ে গেলে ডাল যেন না নরে সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৫.টবে বেশি জল দিলে ডাল পচে যাবে।আবার কম দিলে শুকিয়ে যেতে পারে।তাই জল মেপে দিতে হবে।
Hydroponic পদ্ধতির মাধ্যমে চারা তৈরি।
জবা গাছের ডাল আগের মতোন করেই কাটীং করে নিতে হবে।শুধু মাত্র ডাল মাটি বসানোর বদলে জলে বসাতে হবে আর জল তিন দিন বাদে বাদে বদলাতে হবে।
(Hydroponic system য়ের মাধ্যমে জবা গাছ করার বিষয়ে পরে অন্য দিন বিস্তারিত ভাবে আলচনা করবো।)
৩.গুটি কলমের মাধ্যমে চারা করার পদ্ধতি:
প্রথমে একটি শক্ত ও সামান্য মোটা ডাল নির্বাচন করতে হবে।তারপর ওই ডালের এমন একটি যায়গা খুজতে হবে যেখানে আগে পাতা ছিল।এবার ওর নিচে থেকে ১ inch মাপ নিয়ে ডালের ছেল টাকে চারি দিক দিয়ে তুলে ফেলতে হবে এবং সেখানে রুট হরমোন লাগিয়ে দিতে হবে।এর পর ১ ভাগ মাটি ও ১ ভাগ গোবর সার এক সাথে নিয়ে ভালো করে মেখে মন্ডো বনাতে হবে।মাটির মন্ডোটি নিয়ে হরমোন লাগান স্থানে লাগিয়ে দিতে হবে।তারপর পলিথিন দিয়ে ভাল করে ঢেকে দিয়ে দুই মাথা বেধে দিতে হবে।এই ভাবে ১ মাস রাখতে হবে ।তারপর চারাটিকে কেটে নিয়ে মাটিতে বসাতে হবে।
গুটি কলম করতে কি কি লাগবে?
একটি ছুরি
রুট হরমোন
পাটের দড়ি
পাতলা পলিথিন
গুটি কলম করতে সতর্কতা:
১.যে ছুরি ব্যাবহার করবেন সেটাকে ভালো ভাবে জীবাণু নাশক ঔষদ দিয়ে মুছে নিতে হবে।
২.গরম কালে গুটি কলম না করাই ভালো।
৩.কলমের মাটি টাকে ভালো ভাবে পলিথিন দিয়ে বাধতে হবে।
৪.এক মাস পর যখন শেকর চলে আসবে তখন ডালটি সাবধানে কাটতে হবে যাতে শিকর নষ্ট না হয়ে যায়।
৫.শিকর আসার পর মাটিতে লাগানোর সময় পলিথিন সাবধানে খুলতে হবে যাতে শিকর নষ্ট না হয়ে যায়।
আমি আমার বাগানে যে ভাবে রেখেছি এবং আমার যা অভিঙ্গতা হয়েছে এই গাছটি কে নিয়ে তার উপরে ভিত্তি করে লেখা হয়েছে।যদি কোন ভুল থাকে তাহলে ভুল ধরিয়ে দেবেন।
ভালো লাগলে লাইক করেন।দয়া করে কপি বা পেষ্ট করবেন না।
ধন্যবাদ
- লিঙ্ক পান
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনাকে বাগানের ডাইরির পাতায় স্বাগত জানাচ্ছি।